আমদের গল্পকথা
Saturday, 29 January 2022
একটা বিকেল চাই
Wednesday, 19 January 2022
আমার শহর
আমরা বেরিয়ে পরবো এই শহরের মূল রাস্তা ধরে,
আমরা বেরিয়ে পরবো,
শারীরিক সুস্থতার তাগিদে হাঁটতে থাকা মানুষদের সাথে ।
আমরা প্রথমে পায়রার মোড়ে যাবো,
তারপর সুপার মার্কেট হয়ে সিটি কর্পোরেশনের সামনে দিয়ে সুরভী উদ্যানে গিয়ে কিছুটা জিরিয়ে নেব ।
আর দেখবো বয়সে বড় মানুষগুলোর সুস্থতার তাগিদে করা কর্যকলাপ,
দেখবো পরিচ্ছন্নতাকর্মীর এই শহর পরিস্কারের চেষ্টা,
একটু এগিয়ে কাচারীর সামনে দেখবো মামা তার চায়ের কেটলি পরিস্কার করছে,
ডিসি অফিসের গেটের দ্বায়িত্বে থাকা কন্সটেবল তার পরের শিফটের লোককে দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছে
এই সুযোগে গেটের পাশা থাকা কুকুরটাও একটু ঘুমিয়ে নিচ্ছে।
ততক্ষণে এই শহরে রোদের আলো পুরোপুরি চলে এসেছে,
দোকানগুলো খুলতে শুরু করেছে,
যারা হাটতে এসেছিলো তারাও বাড়ির পথ ধরেছে
নিপিনের দোকানে কিংবা ঘোষ ভান্ডারে গরম গরম রস-মঞ্জুরীর জন্য লম্বা লাইন লেগেছে ।
কোন এপ্রিলের তপ্ত রোদে
আমরা বেরিয়ে পরবো,
আমরা বেরিয়ে পরবো এই শহরের মূল রাস্তা ধরে,
আমরা বেরিয়ে পরবো,
আমাদের চিরো চেনা সেই কলেজের উদ্দেশ্যে
যেখানে আমি প্রথম দেখেছিলাম তোমাকে ।
এগিয়ে এসেছি মূল ফটক পেরিয়ে
মধুবনের পাশের রাস্তা ধরে
আমি হাটছি সেই ভবনের দিকে,
যেখানে কেটেছে আমার টানা দুই বছরের প্রতিটা সকাল
আর ভাবছি সেদিনের কথা ,
একটা রিকশা আমার পাশ কেটে গিয়ে থামলো সামনের ভবনে,
আমি ভবনে ঢুকতে ঢুকতে দেখলাম একটা মিষ্টি চেহারার মেয়ে নেমে আসলো রিকশা থেকে
কাঁধের ব্যাচ থেকে বুঝতে পারি এ আমার বিভাগের কেউ।
যদিও তাকে খুঁজে পেয়েছি অনেক পরে
একেবারে নিজের করে।
কোন এক গোধূলি বেলায়
আমরা বাসার ছাদে পাশাপাশি বসে অপেক্ষা করবো
অপেক্ষা করবো সূর্য ডোবার
অপেক্ষা করবো এই শহরের নিয়ন বাতিগুলো জ্বেলে উঠার
অপেক্ষা করবো শহরের মানুষগুলোর সন্ধ্যাকে আলিঙ্গনের ।
তারপর সন্ধ্যা শেষে আমরা বেরিয়ে পড়বো,
আমরা বেরিয়ে পরবো,
আমরা বেরিয়ে পরবো এই শহরের মূল রাস্তা ধরে,
আমরা বেরিয়ে পরবো এই শহরের রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ।
চোখে পরবে কমিউনিটি সেন্টারের পাশে চটপটির দোকানে লম্বা লাইন
চোখে পরবে পুষ্টির দোকানের মানুষের ভিড়
কিংবা সিঙ্গারা হাউজে একটা সিটের জন্য হুড়োহুড়ি
কিংবা বেতপট্টির স্বর্ণকারদের বিশাল কর্মযজ্ঞ
নাকে আসবে সিটি মার্কেটের সামনে থাকা ফলের দোকানের মিষ্টি সুবাস
কিংবা পুলিশ লাইন্সের মোড়ের ফুলের দোকানের সুবাস
এই শহরে সহজে রাত নামে না
এই শহর আলোকিত থাকে দিনের আলোয়
কিংবা আলোকিত থাকে শহর ভর্তি দোকানগুলোতে থাকা কৃত্রিম বাতির আলোয় ।
এই শহরের রাস্তা কখনও ফাঁকা থাকে না,
শহরের রাস্তা পূর্ণ থাকে তুমি-আমি-আমরাতে ।
আর যখন গভীর রাত নেমে আসে এই শহরে
সব দোকান বন্ধ হয়ে যায়,
কাচারীর সেই চায়ের দোকানের মামা চুলা নিভিয়ে ঘরে ফিরে,
তখনও নিয়ন আলোয় দাঁড়িয়ে এই শহর পাহারা দেয় কিছু অবোলা প্রাণী ।
কেননা, আমার শহরের রাস্তা কখনও ফাঁকা থাকে না ।
Saturday, 18 December 2021
শীত আসছে
শীত আসছে,
রাত দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে,
রাস্তার ঐ সেডিয়ামটা কুয়াশায় ঘোলা ঘোলা লাগছে,
হঠাৎ-ই সাই করে দু'একটা বাহন যাচ্ছে,
কুকুরটা কিছু শুকনো খড়-পাতার উপর জড়ো হয়ে শুয়ে আছে,
জ্যোৎস্নার চাঁদটাও কুয়াশার সাথে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠছে না ।
আমি চাদর মুড়ি দিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম,
অন্য দিনের মতো কুকুরটা সঙ্গী হলো না,
যেনো বোঝাতে চাইছে-
চিরকাল কেউ যাত্রা সঙ্গী হয় না,
কিছু সময় একা থাকাই শ্রেয়,
তাই তুমি বরং এই কুয়াশায় ঢাকা অস্পষ্ট পথটা একাই পাড়ি দাও,
কেননা-
শীত আসছে
Monday, 23 August 2021
সে কি আমায় বুঝবে
আচ্ছা
যদি বলি কপালের টিপ আমার পছন্দ না?
চোখে কাজল দিয়েছো ওতেই হবে;
তাহলে কি সে রেগে যাবে?
যদি বলি পায়ে আলতা দেয়ার প্রয়োজন কি?
নুপুর পরেছো তাই তো যথেষ্ট;
তখন কি সে খুব অভিমান করবে?
যদি বলি কাঁচের চুড়ির দরকার নেই?
হাতে সুন্দর করে মেহেদী দিয়েছো,
তাইবা কম কিসের?
তাহলে কি সে মন খারাপ করবে?
যদি বলি
খোঁপা করে চুলে ফুলের বদলে খোলা চুলই তো ভালো,
তাহলে কি সে কান্না করবে??
সে কি আদৌও বুঝবে আমি কি বলছি,
নাকি
টিপ না পড়াতে বলার রাগে,
আলতা না পড়ার অভিমানে,
কাঁচের চুড়ির মন খারাপে,
খোঁপায় ফুল দিতে না পারার কান্নায়
সে আমাকেই ভুলে যাবে?
নাকি
সে আমাকে বুঝবে ।
আচ্ছা সে কি আমাকে বুঝবে??
রংপুর||রাত ১২.০৮
২৩.০৮.২১
Thursday, 31 December 2020
তুমি
আমি যেমন তোমাকে বারংবার 'ভালোবাসি' বলে বিরক্ত করতে পারি,
ঠিক তেমনি প্রয়োজনে 'সরি' বলতে বলতে অতিষ্ঠ করতে পারি।
সময় মতো ঘুমিয়েছো কিনা, কিংবা জ্বর হলে ওষুধ খেয়েছো কিনা খোঁজ নিতে পারি,ঠিক তেমনি কথা না বলেও তোমাকে ভালোবাসতে পারি ।
আমি তোমার পছন্দের রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইতে পারি না,
তোমার চাওয়ার মতো করে আবৃত্তি পারি না,
কিন্তু ঠিকই আমার ক্ষুদ্র ভাষা জ্ঞান ব্যবহার করে দু'চার লাইন লিখতে পারি তোমায় নিয়ে।
তোমার তো বেরিয়ে পড়বার শখ,
কিন্তু আমার যে জানালা খুলতেই ভয় হয়!
তাও না হয় শেষ বিকেলে শহুরে সূর্যাস্ত দেখা যাবে
কিংবা রাতের শহরে হাতে হাত রেখে হাটা যাবে।
তোমার বৃষ্টি পছন্দ না
কিন্তু আমার ভিজতে ভালো লাগে-
তুমি না হয় ঐ জানালায় দাঁড়িয়ে আমায় সঙ্গ দিও ।
Thursday, 22 October 2020
অব্যক্ত
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি সেদিন,
তুমি রিকশায় উঠে বসলে
একটু থেমে আমায় বললে-তুমি চাইলে আসতে পারো আমার সাথে ।
আমি যেন অপেক্ষায় ছিলাম।
ইচ্ছে ছিল তোমায় সাথে নিয়ে এই ব্যস্ত শহরে ঘুরবো,
যেখানে সব কোলাহল উপেক্ষা করে
আমি তোমার কণ্ঠস্বর শুনতে চাইবো,
আর আমার দৃষ্টি আটকে থাকবে কেবল তোমাতে ।
তবে শহরে সেদিন ব্যস্ততা ছিল না,
ছিল না কোন কোলাহলও
তুমিও চুপ করে ছিলে ।
যা ছিল তাহলো
আমাদের মধ্যে নিরবতা,
আমি আড়চোখে তাকিয়েছিলাম কয়েকবার,
কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেছি বার বার ।
তারপর-
রাস্তা ফুরিয়ে এলো,
আমি নেমে গেলাম,
তুমি ফিরে গেলে আপন গন্তব্যে
'ভালোবাসি প্রিয়!'
Thursday, 24 September 2020
গল্পগুলো জমা হচ্ছে
নিদ্রাহীন রাত্রি যাপন হয় না,
একসাথে ভোর দেখা হয় না,
একসাথে কথার খই ফুটানো হয় না,
শব্দ করে হাসা হয় না ।
গল্পগুলো জমা হচ্ছে,
রাত গড়িয়ে ভোরও হচ্ছে,
কিন্তু ঠিক রাত জাগা আর হচ্ছে না,
তোমার কি কোনো গল্প নেই?
নাকি এখন আর রাত জাগো না?
অনেক দিন কথা হয় না,
হবে হয়তো, আবার হয়তো না ।